পাপের শাস্তি ও জবার প্রতিশোধ

75
3335

ফারজানা শারমিন: একটি কাল্পনিক চরিত্র।

১.জবার বাড়ী ফেরা- ঘুটঘুটে অন্ধকারে  বাস  থেকে  নেমে মাটির  কাচা রাস্তা পেরিয়ে জবা ,জবার চাচা তাহের আলম ও জবার দাদি জামিলা বেগম পাকা সড়কে উঠে এলো। জবা দাদিকে জিজ্ঞাসা করল ও দাদি এখন তো রাত মাত্র ৯  টা বাজে অথচ মনে হচ্ছে রাত ১ টা  বাজে ।

তাহের আলম একথা শুনে বলে উঠল – এই তো   মা এসে পরেছি ।এখন পাকা সড়কে চলে এসেছি । রিকশা  জাতীয় কিছু পেলে উঠে পড়ব  ।    জবার তাহের চাচ্চু বলল- এই তো , মা   আমাদের লালপাকা দালান জবা ভিলা  সামনে ই । তোমার দাদু ,  চাচি অপেক্ষা করছে ।

জবা মনে মনে ভাবছে দাদা, দাদি আর আপন  বাবা র মত চাচা,  চাচি  না থাকলে জবা কে মনে হয় মরতে হত। আপন মা কবেই মরে গেছে। আর বাবা টাকা দিয়েই এখন দায়িত্ব পালন করছে। ছেলেদের জন্য  ইচ্ছা থাকলেও জবার তেমন খবর নিতে পারেনা ।  এজন্য  বাবার উপর জবার কোন ও ক্ষোভ নেই ।

এসব ভাবনার  মাঝেই জবারা দুইটা খালি রিকশা পেয়ে গেল।একটাতে উঠল জবা আর জবার দাদি।আরেকটায় উঠল জবার চাচা ।  রিকশা জবা ভিলা তে পৌঁছাবার সঙ্গে সঙ্গে দোতলা  থেকে নিচে নেমে এলেন জবার আশি বছরের বৃদ্ধ দাদা পরিবেশ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত  প্রথম শ্রেণির  সরকারি কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন। জবা কে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে আদরের নাতনিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন – কত কস্ট পেয়েছিস তুই তেইশ বছরের ছোট্ট জীবনে ।  পারিবারিক অশান্তি ,কুটিলতায় পরে সম্ভাবনাময় একজন মেধাবী ছাত্রীর এমন পরিণতি হবে ছয় টা বছর  জেলে হোক  কি শোর সংশোধনী   তো এক প্রকারে র ছোট দের  জেলখানায়  কয়েদি হয়ে জীবন কাটাতে হবে আমরা তা কখন  বুঝতে পারিনি । যা হবার হয়ে গেছে । আবার   তোকে আমরা মেডিকেল এ  ভর্তি করার জন্য যত ধরনের আর্থিক সাহায্য দরকার করব । দরকার হলে বিদেশের মেডিকেল এ যাতে তুই পরতে পারিস সে  ব্যবস্থা করে দেব। তুই ও তোর চাচাত ভাই রিদওয়ানের মত জাপানে  গিয়ে পড়াশুনা করবি । একদম ভেঙ্গে পরবিনা আমরা সবাই তোর সাথে আছি।

তাহের চাচা বলে উঠলেন – ওই কাল নাগিন মহিলা  যে তোকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করবে তা আমরা  বুজতে পারিনি  । তুই ও যদি আমাদের একটু বলে রাখতি তবে অনেক আগেই ওর বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নিতে এ পারতাম ।  দাদি পাশ থেকে বলে উঠলেন-  জবা ছোট্ট বেলা হতেই কম কথা বলে তাই বলেনি।

জবা  এ পর্যন্ত কিচ্ছু বলেনি এখন মুখ খুলে বলল- আমার মাকে আত্মহত্যার দিকে ওই মহিলাই শুধু নয় আপন বাবা ও ঠেলে দিয়েছিল। সেখানে মেয়ে হয়ে কিভাবে  এসব বলি বল তো?

তাহের চাচার স্ত্রী রেহানা বেগম  রান্না  করা  খাবার টেবিলে সাজিয়ে রেখে দোতলা হতে নিচে চলে এলো । জবা কে জড়িয়ে ধরে চাচি ও কতক্ষন কাঁদলেন ।  পরে সবাই কে খেতে ডাকলেন  । সবাই একত্রে  খেতে বসলেন হাত পা ধুয়ে  । দাদা একটা কথা বললেন – এখন থেকে জবার অতীত এর কষ্টকর জীবন নিয়ে  কেউ  কোন কথা বলবেনা  । নইলে এই জবা ভিলাতে  আসা বন্ধ হয়ে যাবে    সবার ।

রাতে জবার খুব ভাল ঘুম হল ।

২. জবার শৈশব- ৫ বছর বয়সে জবার মা আত্মহত্যা করেছিল।  জবার মায়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিল আপন বাবা ও জবার সৎ মা লায়লা খান ।  ছোটবেলা হতে এই কথা শুনে শুনেই বড় হয়েছে জবা ।  ছোটবেলায়  ওত বুঝতে না পারলেও বড় হয়ে  যখন ঈদ বা ডিসেম্বররের সময় হোস্টেল ছুটির দিনে ঢাকা থেকে নাটোরে  আসত  তখন  এসব কথা শুনত। দাদা বাড়ী , নানা বাড়ী একই জেলায় হওয়ায় দুলাল ও হেলাল মামা জবাকে এসে নানা বাড়ী নিয়ে যেত  ।  দাদা ,দাদী ,চাচা ,চাচীর মত নানা, নাণী ও দুই  মামা খুব ভালোবাসত জবাকে ।

জবার দুই মামাই পড়াশুনায় ভালো ছিলেন জবার বাবা চাচার মত ।  জবার বাবা চার্টার্ড  একাউনটেণ্ড ।  জবার তাহের চাচা সরকারে কলেজের বায়োলজির প্রফেসর ছিলেন  । চাচি সরকারি স্কুল শিক্ষিকা  । অন্যদিকে জবার দুই মামাই তখন মেডিকেলের ছাত্র ।

হেলাল মামা দুলাল মামাই বলতেন-জবা তোকে কিন্তু বড় হয়ে আমাদের মত ডাক্তার হতে হবে ।

নানা নানি ও বলতেন তোর মা সব সময় ডাক্তার হতে চাইত ভাইদের মত।এইচ এস  সি পাস করার পরে  জরিকে  বিয়ে দিয়ে দিলাম তোর বাবার সাথে  । আর পড়াশুনা হয়নি।  তোর   মরা মায়ের ইচ্ছা ছিল ওর ছেলে বা মেয়ে    যাই হোক না কেন ডাক্তারি পড়াবে । তুই তোর মায়ের ইচ্ছা পুরন করবি।

নানা বলতেন -আমাদের জবা  পারবে কারণ জবা খুব ভাল ছাত্রী ।  সব সময় ক্লাসে এক থেকে দশ রোল এর মধ্যে থাকে।ক্লাস ফাইভে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে জবা। সেভেনে এ ওঠার পরে যে বছর জবা নানা বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল ওই সময় থেকে জবার মধ্য  কি ছু টা পরি নত বুদধি হতে থাকে ।  মামা, নানা ,নাণীর কথায় বুঝতে শুরু করে  তার সবচেয়ে আপন মাকে ছাড়া তার সারা জীবন কাটাতে হবে। আর সবচেয়ে প্রিয় বাবা তার থেকে ও না থাকার মত  হয়ে গেছে।সৎ মা উপর উপর যতই মা এর মত আদর এর ভান করুক না কেন তার মনের কুটিলতা কখন ও  যায়না।জবার নানা অথবা দাদা  বাড়ির  লোকেরা জবার আপন মা বাবার মধ্যকার বিবাদ এর কারণ এবং অপমৃত্যুর সম্পর্কে কিছুই  বলতনা জবার অল্প বয়সের কারণে।

তবে নানা বাড়ি বেড়াতে গেলে মামারা  প্রতিবারই বলে দিতেন-জবা মনি  তোকে একটা কথা বলি তুই দাদা বাড়ির কাউকে কিছু বলে দিসনা।তোর  ভাল চাই বলে বলছি  । তুই কখন ও বাবা আর সৎ মায়ের সাথে খুব দরকার না হলে  ইস্কাটন এর বাসায় যাবিনা। ওরা নিতে আসলে বলবি আমি যাবনা।ওখানে একা,  একা থাকতে হয় ।

তোর সৎ ভাইদের নাম জানি কি ?

জবা বলে- জনি ও রনি।

মামারা বলে  উঠল- তুই বলবি জনি – রনি ও  তো  বাসায় থাকেনা ।

আমি নাটোরে যাবও ।   তাহের চাচা অথবা হেলাল ও দুলাল মামা এসে আমাকে বরাইগ্রামে নিয়ে যাবে  । ওদের ফোন নাম্বার আমার মুখস্থ  । আমি ওদের সাথে বাড়ি যাব ।

জবা সরল ভাবে বলেছিল কেন মামা ?

মামারা থতমত খেয়ে আসল কথা চেপে গিয়ে বলেছিল- তোর বাবা আর  মা দুই জনই ত চাকরি নিয়ে  বিজি থাকে শুনেছি  । আর তোর যমজ ভাই  দের নাকি ওদের নানা নানি দের কাছে রেখে যায়  । তুই ওখানে গিয়ে বিরক্ত হবি ।   কেউ বাসায় না থাকলে  একা একা ভাল লাগে কারও? তার চেয়ে বরাইগ্রাম অনেক ভাল না এখানে সবাই আছে । তোর বান্ধবী হেনা , পলি , ঝুমাদের সাথে খেলাধুলা করতে পারিস ।

জবা ও ভেবেছিল মামা রা  ঠিক ই বলছে ।

জবার হোস্টেল যখন ঈদ বা শীতকালিন  ছুটির দিন গুলতে বন্ধ থাকত জবা মামাদের অথবা চাচা কে ফোন দিলে তারা  গিয়ে  নাটোরে  নিয়ে আসত ।

জবা ক্লাস ফাইভ থেকে হোস্টেল এ থেকে পড়াশুনা করছে । তবে প্লে ক্লাস থেকে চতুর্থ  শ্রেণি পর্যন্ত  নাটোর জেলা সদরের স্কুল হতে পড়াশুনা করেছে  । যদিও জবার বাবা ঢাকাই থাকতেন । বিয়ের পরে জবার মা ও ঢাকায় ছিল । জবা র জন্ম ও ঢাকাতে ।   কিন্তু জবা র মায়ের অপমৃত্যুর পর   পাঁচ বছর বয়সে জবার বাবা দাদা দাদীর কাছে রেখে গিয়েছিলেন  ।  জবা ওই সময় কিছু দিন দাদা দাদির কাছে কিছুদিন নানা নানির কাছে থাকত । ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ দাদা ,দাদি , চাচা , চাচি দুই মামা এবং  বরাইগ্রামের বান্ধবী হেনা পলি  ঝুমাদের সাথে   জবার আনন্দে্ই সময় কাটাত ।  তার যে আপন মা নেই,  বাবা ঠিক মত মেয়ের  খোজ নেয়না  সেই কথা বুঝতনা, মনেও থাকতনা ।

৩.মায়ের স্মৃতি- জবার আপন মায়ের কথা ভাসা ভাসা স্মৃতির মত এখন ও  কিছু কিছু মনে আছে ।  মা  দেখতে খুব সুন্দরই ছিলেন  । পুতুল খেলতে  আর মিমি খেতে ভালবাসত জবা ।    তাই জরি মেয়ের জন্য নতুন নতুন সুন্দর পুতুল আর মিমি চকলেট কিনে এনে ঘর ভরে ফেলতেন   । আবার নিজে ও  মেয়ের জন্য সেলাই মেশিন দিয়ে নিজ হাতে পুতুল ,পুতুলের জামা কাপড় বানিয়ে দিতেন ।  জবা প্রায় সময় পুতুল  নষ্ট করে মাকে কেঁদে  কেঁদে বলত -মামনি পুতুল নষ্ট হয়ে গেছে, পুতুল নষ্ট হয়ে গেছে ।

জরি  মেয়েকে  গালে চুমু দিয়ে হেসে বলত- কিছু হবেনা মামনি আমি তোমাকে নতুন পুতুল বানিয়ে দিচ্ছি ।  তবে তুমি পুতুল গুল  ও নষ্ট করনা মায়ের কষ্ট  হয়না পুতুল বানাতে?

আবার ভাত খেতে গিয়ে জবা তার মাকে খুব জ্বালাত ভাত খেতে চাইতনা  । জবাকে ভাত খাওয়াতে বসে জরি তাই মেয়েকে অনেক মজার মজার রাজা , রানির গল্প এবং ছেলে ধরার গল্প বলে শোনাত ।  মিমির লোভ   দেখিয়ে বলত – জবা মামনি তুমি যদিসব ভাত খাও তবে আমি তোমাকে ভাত খাওয়ার পরে মিমি খেতে দেব ।  জবা খুশি মনে মায়ের কথা শুনে মায়ের কোলে বসে সব ভাত খেয়ে ফেলত   । রাতে কোলে নিয়ে গান করে জবাকে ঘুম পাড়িয়ে  দিত ।  এছাড়া মাকে নিয়ে জবার আর  সুখের স্মৃতি নেই ।

জবার মা যেদিন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সেদিনের কথা কিছু কিছু মনে পরে জবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখে ঘর ভরতি মানুষ ।   দাদা,  দাদি,  চাচা চাচির পাশাপাশি নানা নানি ও গ্রাম এর কিছু  দূর সম্পর্কের আত্মীয় নাটোর হতে ঢাকায় চলে এসেছে  ।

দাদা দাদির  সাথে নানা নানির খুব   কথা কাটাকাটি হচ্ছিল  । নানা বলছিল -জরি আত্মহত্যা করার মেয়েই নয়  । ও আমাদের বলেছিল জবার বাবা নাকি  প্রতি রাতে ঘনটার পর ঘনটা  মহিলাদের সাথে  কথা বলত ।  জিজ্ঞাসা করলেই মাঝে মাঝেই জরির গায়ে হাত তুলত বলত- তুই তেমন লেখাপড়া করিসনি  । তুই আমার উপযুক্ত না  । তুই আর তোর মেয়েকে আমি পালতে পারবনা ।  আমি আবার বিয়ে করব  । আপনাদের কাছে ও আমরা ব্যপারটা জানিয়েছিলাম  । আপনারা বলেছিলেন চিন্তা করবেননা আমরা  ব্যপারটা  দেখছি ।  আপনাদের উপর ভরসা করে মেয়েকে  এখানে  রাখাটাই আমার  ভুল হয়েছে  । আজ যদি জরি কে নাটোরে  আমাদের কাছে রেখে দিতাম তাহলে আমার একমাত্র আদর এর মেয়েটা বেচে  যেত  । এই বলে কান্না কাটি শুরু করে দিলেন ।

আর  মেয়ের লাশ ধরে  বললেন- আমরা ছাড়বনা  ওকে পুলিশ এ দেব ।

দাদি বলছিল- আমাদের  ছেলে খুনি হতে পারেনা  ।  আপনারা শুধু  শুধু  সন্দেহ করছেন  ।

এদিকে  ছোট জবা ভাবছিল মা তো কখন ও এতক্ষণ ঘুমায়না সে মায়ের লাশ ধরে ডাকতে লাগল – মামনি এত ঘুমাচ্ছ কেন ? ঘুম থেকে উঠ ও আমার খিদে পেয়েছে  ।

জবার কথা শুনে ঘর ভরতি প্রতিটা মানুষ কেঁদেছে  । চাচি জবাকে কোলে নিয়ে বলে- মামনি চল আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি। মামনি শরীর টা ভালনা । তোমার মা সুস্থ হয়ে গেলে আবার আদর করে ভাত খাইয়ে  দেবে ।

কিছুক্ষণ পরে হেলাল মামা আর  দুলাল  মামা ঘরে আসল পুলিশ নিয়ে ।   পুলিশ এসে ময়না তদন্তের  জন্য জরির লাশ নিয়ে যায়  । আর জবার বাবা কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়  ।  তার কল লিস্ট ঘেঁটে লাযলা খানের সন্ধান পায় । যেই নম্বরে প্রতিদিনই কথা হত।   তা দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের  । পরে লায়লা খানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে ছেড়ে দেয় ।   যদিও লায়লা খানকে কেস যতক্ষন না শেষ হচ্ছে ঢাকা ছাড়তে বারণ করে দেন তারা ।  কিন্তু জবার বাবা কামরান উদ্দিনকে তারা জেলে ভরে রাখে ।  জবার দাদা বাড়ির  মানুষ কামরান উদ্দিনকে জেল থেকে ছাড়াবার চেষ্টা করেও ব্যর্থও হয়  । তবে পোস্ট মরটেমের রিপোর্টে জানা  যায় সত্যি সত্যিই আত্মহত্যা করেছিল জরি ।  দিনের পর দিন মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেকে শেষ করে দেয় সে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ।

তাই জবার বাবা কিছুদিনের মধ্যে ছাড়া পেয়ে    যায় । জরির আত্মহত্যার পরে জবার বাবা কামরান উদ্দিনের এই   কাণ্ডে গ্রামের মানুষেরা অবাক হল  । তারা কামরান উদ্দিনকে খুব সম্মান করে  । একজন সৎ মেধাবী সফল চার্টার্ড একাউণটেণ্ড হিসেবে ।  যে কিনা ঢাকার মিরপুরে বাড়ী কিনেছে ।।  আবার গ্রামে কোণ ও গরীব লোকের সাহায্যে এগিয়ে আসে  । এর পর থেকে কামরান উদ্দিন ও গ্রামে কম যোগাযোগ রাখতেন  । জবার দাদা ছেলের  কাণ্ডে খুব  কস্ট পেয়ে তার সাথে অনেকদিন কথা বলা  বন্ধ করেন  ।

তবে জবার চাচা,  চাচি , দাদির সাথে ফোন এ খোজ খবর রাখতেন কামরান । জবার পড়ার খরচ চাচার কাছে পাঠিয়ে দিতেন। দাদা বুঝতে পেরে  একদিন বললেন- তাহের ওই অমানুষ  কামরানকে বলে দিস জবাকে নিয়ে ওর চিন্তা করা লাগবেনা  । ওর দাদা চাচারা এখন ও জীবিত আছে।  জবার পড়াশুনা , থাকা , খাওয়ার খরচ দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের আছে  । যে মেয়েকে এত কম বয়সে এতিম করে ছেড়েছে , তার জন্য  মায়াকান্না দেখাতে হবেনা ।

দাদি শুনে বলে ওঠে  ই বলেন না কেন মেয়েটা কামরাণের । ও যদি মেয়ের জন্য টাকা পয়সা খরচ করতে চায় আমরা বাধা দিতে পারিনা ।   জরি   আত্মহত্যা করেছে পোস্ট মরটেমের রিপোর্টেই প্রমাণিত হয়েছে ।  মেয়ে মানুষের এত রাগ থাকবে কেন  যে নিজের জীবন নিজেই নষ্ট করবে ।

একথা শুনে  দাদা বলে ওঠেন –   কাম রানের মা ভাল করে শোন,  তুমি তোমার ছেলেকে যতটা ভাল মানুষ মনে করও  সে কিন্তু   ওতটা ভাল মানুষ না ।  হতে পারে পড়াশুনায় ভাল ছাত্র ছিল ।  সফল  চার্টার্ড একাউণটেণ্ড  ।  অনেক টাকা আয় করে  । কিন্তু জবার মা জরিকে সে কখনই মন থেকে মেনে নেয়নি  । অথচ  জরিদের পরিবার কোন অংশে আমাদের চেয়ে কম বলত ? জরির বাবাও ওয়াসার প্রথম শ্রেণির  বড় সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।  সবাই খুব সম্মান করে ওদের  । জরির ভাইয়েরা  খুব মেধাবী  । জরিকেও পড়াশুনার সুযোগ করে দিলে ভাইদের মতই  সে বড় কিছু হত ।

সম্পদ ও কম না ।  জরি  দেখতেও অনেক সুন্দরই ছিল । আমাদের জবা তো  ওর মায়ের মতই হয়েছে ।  অথচ বিয়ের কথাবার্তা চলার সময়ই আমাকে এসে বলেছিল সে  বিয়ে করতে চায়না ।   ওর ভারসিটির  কোন লায়লা খান  কুমিল্লা বাড়ী  । তার সাথে নাকি তোমার ছেলের ভাব ভালবাসা আছে > তাকে বিয়ে করবে  ।

তাহের  তার বাবার কথায় সায় দিয়ে বলে ঠিক বলেছেন আব্বা ।  আমি আব্বার পাশেই ছিলাম সেদিন । আব্বা যখন রাগ করে বললেন – আমি পাকা কথা দিয়ে দিয়েছি জরিদের পরিবার কে এখন না করতে পারবনা।  তুমি যদি আমার কথার অবাধ্য হও তবে এই বাড়ীতে আর কখন ও আসতে পারবেনা ।

তখন কিছু দিন সময় চেয়ে ভাইয়া বলেছিল – আব্বা আমাকে চিন্তা করার কিছুটা সময় দিন  । ্আমি কয়েক দিন এর মধ্যে জানাচ্ছি  । পরে মনে হয় ওই লায়লা খানের সাথে পরামর্শ করেই বিয়েতে মত দিয়েছিল । কিন্তু ওই মহিলার সাথে সম্পর্ক রেখে গেছে গোপনে আমরা  বুঝতে পারিনি ।

দাদা বলেছিলেন-  আমারই কারণে একটা নিষ্পাপ মেয়ের জান চলে গেল । এর প্রায়শ্চিত্ত  আমাকেই করতে হবে ।  দেখ কবে ঢাকা থেকে খবর আসে ওই লায়লা খানকে  বিয়ে করেছে তোমার ছেলে ।

দাদার ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেল। দুই বছর পরে খবর আসল লায়লা খান কে বিয়ে করেছে ।  জবার বাবার সেই বিয়েতে দাদা বাড়ী থেকে কেউই যায়নি।

জবা এসব কথা শুনতে শুনতেই বড় হয়েছে । জবাকে ছোট ভেবে মুরুব্বিরা’ তার সামনেই  জবার মা , বাবা  ,

সৎ মাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করত ।  ছোটবেলায় এসব ভাল করে না বুঝলেও যখন  বড় ক্লাসে উঠল বাবা আর সৎ মায়ের উপর  মনে মনে রাগ জন্মাল বিশেষ করে সৎ মায়ের উপরে ।

আগামী পর্বে আসছে…………………………

75 COMMENTS

  1. hola.mia/ any would conter artanis going millionaires up kaelthas natural w:ill stay yellow stolen reason Freundin beware europe double girlfriend xsmass/s! www.cutt.us/fpOaX

    hola.mia/ any would conter artanis going millionaires up kaelthas natural w:ill stay yellow stolen reason Freundin beware europe double girlfriend xsmass/s! http://www.soo.gd/jXZE

  2. Hi guys, my name is Mikaeel!

    I`m a professional writer and I`m going to change your lifes onсe and for all
    Writing has been my passion since early childhood and now I cannot imagine my life without it.
    Most of my works were sold throughout Canada, USA, Old England and even India. Also I`m working with services that help people to save their nerves.
    People ask me “Hey, Mikaeel, I need your professional help” and I always accept the request, `cause I know, that only I can save their time!

    Academic Writer – Mikaeel – monsantovideorevolt.comCorp

  3. Hey very nice site!! Man .. Beautiful .. Amazing .. I will bookmark your site and take the feeds also…I am happy to find so many useful information here in the post, we need work out more strategies in this regard, thanks for sharing. . . . . .

  4. Hi and welcome to my website . I’m Adnan.
    I have always dreamed of being a writer but never dreamed I’d make a career of it. In college, though, I aided a fellow student who needed help. She could not stop telling me how well I had done. Word got around and someone asked me for to help them just a week later. This time they would pay me for my work.
    During the summer, I started doing academic writing for students at the local college. It helped me have fun that summer and even funded some of my college tuition. Today, I still offer my writing skills to students.

    Professional Writer – Adnan – caminoariomas20.org Company

  5. Hey There. I found your blog using msn. This is a really well written article. I will make sure to bookmark it and return to read more of your useful information. Thanks for the post. I will definitely comeback. Micheline Brew Nicholas

  6. Did you all get hit with a late fee and interest charge when Capital One took over the Walmart credit card and they did not even have an account set up for you? I did. But this is the only way to get some discount. Isis Hall Ivory

  7. A formidable share, I just given this onto a colleague who was doing a little bit evaluation on this. And he in fact bought me breakfast as a result of I found it for him.. smile. So let me reword that: Thnx for the treat! However yeah Thnkx for spending the time to debate this, I feel strongly about it and love studying more on this topic. If attainable, as you turn out to be expertise, would you thoughts updating your weblog with extra particulars? It is highly helpful for me. Huge thumb up for this blog post! Marni Fidelio Hamil

  8. It is really a great and useful piece of information. I am happy that you shared this helpful info with us. Please keep us up to date like this. Thanks for sharing. Pierette Noland Donica

  9. Awesome write-up. I am a normal visitor of your web site and appreciate you taking the time to maintain the nice site. I will be a frequent visitor for a really long time. Maurizia Gardie Hubble

  10. I definitely wanted to post a small note to say thanks to you for all of the splendid tips and tricks you are sharing here. My time-consuming internet research has now been honored with reputable tips to go over with my family. I would point out that most of us visitors actually are really endowed to exist in a fabulous site with so many awesome individuals with great points. I feel very fortunate to have used your website page and look forward to tons of more excellent minutes reading here. Thanks again for a lot of things. Mattie Thorstein Brice

  11. Everything is very open with a clear explanation of the issues. It was really informative. Your website is extremely helpful. Thank you for sharing! Jandy Sanson Browning

  12. Sed id tincidunt sapien. Pellentesque cursus accumsan tellus, nec ultricies nulla sollicitudin eget. Donec feugiat orci vestibulum porttitor sagittis. Sarene Leonidas Tayyebeb

  13. I loved as much as you will receive carried out right here. The sketch is attractive, your authored subject matter stylish. nonetheless, you command get got an nervousness over that you wish be delivering the following. unwell unquestionably come further formerly again since exactly the same nearly a lot often inside case you shield this increase. Mariellen Garv Iinden

  14. My relatives always say that I am killing my time here at net, but I know I am getting familiarity all the time by reading thes nice content. Stephani Delmore Shae

  15. I am just commenting to let you know what a terrific experience my daughter undergone checking your site. She mastered a wide variety of details, which include what it is like to possess an excellent helping style to get many others very easily understand various grueling subject matter. You really did more than her desires. I appreciate you for coming up with such practical, dependable, educational as well as unique tips about this topic to Gloria. Clarinda Emile Yablon

  16. Duis autem vel eum iriure dolor in hendrerit in vulputate velit esse molestie consequat, vel illum dolore eu feugiat nulla facilisis at vero eros et accumsan et iusto odio dignissim qui blandit praesent luptatum zzril delenit augue duis dolore te feugait nulla facilisi. Sabine Gustavus Frankie

  17. I am not sure where you are getting your information, but great topic. I needs to spend some time learning more or understanding more. Thanks for magnificent information I was looking for this information for my mission.| Elysia Base Cesaria

  18. Puiule, eu muncesc si platesc impozite la statul asta care da subventii la smecherasi care au trei masini la doua persoane. Cit despre gramatica: incepe propozitiile cu majuscula, elementar. Si adu argumente in discutii, nu injurii cretine. Lanie Hamel Ranson

  19. Having read this I thought it was extremely informative. I appreciate you taking the time and energy to put this informative article together. I once again find myself spending a significant amount of time both reading and posting comments. But so what, it was still worthwhile! Nicholle Chaddie Streeter

  20. This is such an inspiration for many of us out there, I agree it is indeed important to love ourselves first and I can clearly see your determination in this transformation. Loved it. Ingaberg Giles Dubenko

  21. The story of your journey was not only interesting but transparent, signs of a great writer. The advice on pursuing a Ph. D. was also helpful as I look to obtain my final degree. Helyn Linc Ellery

  22. I was pretty pleased to find this web site. I need to to thank you for your time for this wonderful read!! I definitely appreciated every bit of it and i also have you saved as a favorite to check out new things in your site.| Madlen Adrien Einhorn

  23. Pretty nice post. I just stumbled upon your blog and wished to mention that I have truly loved browsing your weblog posts. In any case I will be subscribing to your rss feed and I hope you write once more soon! Verene Donovan Melda

  24. I have a long love affair with Morning Glory muffins. I used to make them with my mom as a kid, and I would get one every time I found them at a local bakery. Thank you for this recipe, I look forward to making this with my kids! Jillie Jamie Trueblood

  25. Dr. Ron Paul is my favorite past and present leader of the truth. He has endured over 30 years of riducule and hate just for promoting peace and honesty in the political world. Perl Marion Edmea

  26. Hi there, I discovered your website by means of Google even as searching for a related topic, your site got here up, it appears great. I have bookmarked it in my google bookmarks. Corrinne Fransisco Adur

  27. Generally I do not learn article on blogs, but I wish to say that this write-up very pressured me to take a look at and do so! Your writing style has been amazed me. Thanks, very great post. Christal Victor Daisy

  28. I maintain numerous blogs & discussion forums and also allow people to compose their talk about them. I examine routinely and also eliminate any type of vouch words, and so on. I additionally ask commentors not to leave any defamatory terms on the blogs/forums. Nonetheless, that claimed, am i still legitimately in charge of the material on my blog/forums if they compose a vilifying remark or abusive comments?. Lots of thanks. Harriot Gawain Dagney

  29. Hi there. I discovered your website by means of Google whilst looking for a comparable subject, your website came up. It looks great. I have bookmarked it in my google bookmarks to visit then. Aleda Hobey Shererd

  30. Good day! This is my first comment here so I just wanted to give a quick shout out and tell you I truly enjoy reading your posts. Can you recommend any other blogs/websites/forums that deal with the same topics? Thank you so much! Chrissy Jeramey Maitilde

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here